সৌদি-পাকিস্তানের চুক্তিতে মুসলিম বিশ্বের ‘সুপার পাওয়ার’ হওয়ার অবস্থান তৈরি হলো
পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে ঐতিহাসিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, এ চুক্তি মুসলিম বিশ্বের বহু দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
শনিবার (২০ সেপ্তেরব্ম) জিও নিউজের টকশো জিরগা-য় তিনি বলেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা ও সৌদি আরবের অর্থনৈতিক শক্তি একত্রিত হওয়ায় মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি সম্ভাব্য ‘সুপার পাওয়ার’ অবস্থান তৈরি হলো।
তিনি বলেন, ‘এ চুক্তি মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি সুসংবাদ। এর মাধ্যমে প্রতিরক্ষা উৎপাদন বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
রানা সানাউল্লাহ আরও জানান, ‘পাকিস্তানের ওপর কোনো আক্রমণ হলে সেটিকে সৌদি আরবের ওপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে, একইভাবে সৌদি আরবের ওপর হামলা হলে পাকিস্তানও সেটিকে নিজেদের ওপর হামলা মনে করবে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তান সবসময় প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে থেকেছে। ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—আমরা কখনো আগ্রাসন শুরু করি না। ভারত আক্রমণ করলে আমরা জবাব দেবো,’ বলেন তিনি।
সানাউল্লাহ উল্লেখ করেন, ন্যাটোর বাইরের কোনো দেশে এ ধরনের চুক্তির নজির নেই। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রও এ চুক্তিতে কোনো আপত্তি করবে না।
অন্যদিকে শুক্রবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শফকাত আলী খান বলেন, পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি পুরোপুরি প্রতিরক্ষামূলক, এটি কোনো তৃতীয় দেশের বিরুদ্ধে নয়।
তিনি জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত এ পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির মাধ্যমে বহু দশকের পুরনো নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী হলো। চুক্তিতে বলা হয়েছে, যেকোনো এক দেশের ওপর আক্রমণ হলে সেটি উভয় দেশের ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
মুখপাত্র আরও বলেন, পাকিস্তান ও সৌদি আরব ভ্রাতৃত্ব ও সহযোগিতার বিশেষ সম্পর্কে আবদ্ধ। দুই দেশের নেতৃত্ব প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উল্লেখ্য, ষাটের দশক থেকেই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা পাকিস্তান-সৌদি সম্পর্কের মূল ভিত্তি। নতুন এ চুক্তি শুধু দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে না, বরং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
0 Comments